নীরবতা (নীরব থাকা) নিয়ে ইসলামিক পটভূমিতে বেশ কিছু মূল্যবান উক্তি ও নির্দেশনা রয়েছে। এগুলো মূলত পবিত্র কুরআন এবং হাদিস থেকে নেওয়া। এখানে নীরবতার গুরুত্ব এবং এর ফজিলত নিয়ে ১৫টি ইসলামিক উক্তি উল্লেখ করা হলো:
নীরবতার গুরুত্ব নিয়ে কুরআন ও হাদিস থেকে উক্তি:
কুরআন (আল হুজরাত 49:12):“হে মুমিনগণ! তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে থাকো। কেননা অনুমানের কিছু অংশ পাপ।”(অপ্রয়োজনীয় কথা বলা এবং গিবত এড়িয়ে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।)
হাদিস:রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:“যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা নীরব থাকে।”(বুখারি ও মুসলিম)
হাদিস:“অতিরিক্ত কথা বলো না। কেননা অধিক কথাবার্তায় অন্তর কঠিন হয়ে যায়, আর কঠিন অন্তরের লোক আল্লাহ থেকে দূরে থাকে।”(তিরমিজি)
কুরআন (আল বাকারা 2:83):“তোমরা মানুষের সঙ্গে সদ্ভাবে কথা বলো।”(অপ্রয়োজনীয় কথা এড়িয়ে মিষ্টভাষী হতে উৎসাহিত করা হয়েছে।)
হাদিস:“একজন প্রকৃত মুসলিম হলো সে, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।”(বুখারি)
হাদিস:“নীরবতা জ্ঞান বাড়ায়, আর কথার সংযম আখিরাতে উত্তম ফল বয়ে আনে।”(ইমাম গাজালি)
কুরআন (লুকমান 31:19):“তোমার কণ্ঠকে সংযত করো। কেননা সবথেকে অপ্রীতিকর আওয়াজ হলো গাধার আওয়াজ।”
হাদিস:“যে তার জিহ্বা রক্ষা করবে, আমি তার জান্নাতের জিম্মাদারি নেব।”(তিরমিজি)
হাদিস:“নীরবতা মুমিনের জন্য একটি গুণ। এটি তাকে পাপ থেকে রক্ষা করে।”(মুসনাদে আহমদ)
কুরআন (আল-ইমরান 3:159):“তোমরা পরস্পরের সঙ্গে নম্র ও বিনয়ী হও এবং দয়া প্রদর্শন করো।”
হাদিস:রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:“যে ব্যক্তি অন্যদের ভুলত্রুটি খোঁজার জন্য কথা বলে, তার নিজের অজান্তে পাপ জমা হয়।”(আবু দাউদ)
হাদিস:“তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে নীরবতা পালন করে এবং অপ্রয়োজনীয় কথা বলে না।”(বায়হাকি)
হাদিস:“নীরবতা হলো জ্ঞানের দরজা। যে নীরব থাকে, সে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা পায়।”(ইমাম তাবরানি)
হাদিস:“যে বেশি কথা বলে, সে বেশি ভুল করে। আর যে বেশি ভুল করে, তার জন্য জাহান্নামের শাস্তি অপেক্ষা করছে।”(তিরমিজি)
কুরআন (আল আহযাব 33:70):“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।”(অপ্রয়োজনীয় কথা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সত্য কথা বলার নির্দেশ)
উপসংহার:
ইসলামে নীরবতা একটি মহৎ গুণ হিসেবে পরিগণিত। এটি শুধু মুমিনের পবিত্রতা রক্ষা করে না, বরং তার সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে শান্তি বয়ে আনে। অপ্রয়োজনীয় কথা বলা এবং অহেতুক তর্ক-বিতর্ক এড়িয়ে চলা একজন প্রকৃত মুসলিমের অন্যতম গুণ।